শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন

আপডেট
 শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি: নকলায় বন্যার পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু

 শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি: নকলায় বন্যার পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু

মোঃ আব্দুর রহিম রনি ,শেরপুর : মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় ও বৃষ্টি না হওয়ায় শেরপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নকলা উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে।  জেলা, উপজেলা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি অনেক হ্রাস পাওয়ায় আজ সোমবার শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চলে নেমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী।
তবে নকলা উপজেলার ধনাকুশা উচ্চ বিদ্যালয় ও তারাকান্দা দাখিল মাদ্রাসা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো শতাধিক মানুষ অবস্থান করছেন।  গত  রোববার সন্ধ্যায় বন্যার পানিতে ডুবে নকলা উপজেলার গণপদ্দি ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে মো. আব্দুর রাজ্জাক (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, শেরপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৯ টায় শেরপুর জেলার ভোগাই নদের পানি ১৩৮ সেন্টিমিটার, চেল্লাখালী নদীর পানি ৭৭ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৫৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে। পাউবো, শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকীবুজ্জামান সোমবার সকালে বলেন, নদ-নদীর পানি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে বন্যার পানি কমার সাথে সাথে গ্রামীণ সড়কের বেহাল অবস্থার চিত্র ভেসে ওঠছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝিনাইগাতী-ফাকরাবাদ সড়কের বিভিন্ন অংশ ঢলের পানিতে ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।  ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহিদুল হক বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যাকবলিত মানুষের  দুর্ভোগ কমেনি। এখনো দুর্গম এলাকায় মানুষের খাদ্য সঙ্কট রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।  এদিকে এ প্রতিবেদকের নিকট থেকে তথ্য পেয়ে ‘আমরা পাকুরিয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের’ সদস্যরা সোমবার বিকেলে বাদাতেঘরিয়া ও ধলা নামাপাড়া গ্রামের ২৫টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা হিসেবে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত সব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কাজে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সার্বিক তৎপরতা চালাচ্ছেন ও সহযোগিতা করছেন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ সবাই এগিয়ে এসেছেন। সবাই মিলে এ দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |